Breaking News

অভিনব উপায়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির শিরোপা জিতলো ভারত

নিজস্ব প্রতিবেদক: এক বছরেরও কম সময়ে, ভারত একের পর এক আইসিসির শিরোপা জয় করে ক্রিকেট বিশ্বে নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করেছে। ২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর এবার, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতেও টানা অপরাজিত থেকে শিরোপা ঘরে নিয়ে গেল তারা। একটি যুগান্তকারী পালা, যেখানে ভারতীয় ক্রিকেট দল নিজেকে নতুন করে সংজ্ঞায়িত করেছে, এবং রোহিত শর্মার নেতৃত্বে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পথে নিজেদের অনবদ্য খেলা উপহার দিয়েছে।

নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে আইসিসির ফাইনালে এর আগে কখনও জয় পায়নি ভারত। ২০০০ সালে এই কিউইরা চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জিতেছিল, আর ২০২১ সালে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে ভারত হারিয়েছিল। কিন্তু এবারের ফাইনালে ভারত নিজের প্রতিশোধ নিয়েছে, নিউজিল্যান্ডকে ৪ উইকেটে পরাজিত করে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির শিরোপা পুনরুদ্ধার করেছে। তৃতীয়বারের মতো চ্যাম্পিয়ন হয়ে ইতিহাসের সেরা দল হয়ে দাঁড়িয়েছে ভারত।

ভারতীয় দলের জন্য এবারের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ছিল এক অনন্য অভিজ্ঞতা। পাকিস্তানে আয়োজিত হলেও ভারত সেখানে খেলতে অস্বীকৃতি জানালে, তাদের সব ম্যাচ আয়োজন করা হয় দুবাইয়ের নিরপেক্ষ ভেন্যুতে। এতে ভারত পুরো টুর্নামেন্টে এক জায়গাতেই খেলেছে, যেখানে অন্য দলগুলোকে নানা দেশে এবং ভেন্যুতে যাতায়াত করতে হয়েছে। এই সুবিধা ভারতকে শারীরিক এবং মানসিকভাবে আরও প্রস্তুত থাকতে সাহায্য করেছে, বিশেষ করে একই মাঠে খেলার ফলে কন্ডিশন ও উইকেট সম্পর্কে বিশদ ধারণা পাওয়া গিয়েছিল।

ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্টের সিদ্ধান্তই তাদের শিরোপা জয়ের পথ প্রশস্ত করেছে। দুবাইয়ের কন্ডিশন বুঝে, অতিরিক্ত একজন স্পিনার নিয়েছিল ভারত। যশস্বী জয়সওয়ালকে বাদ দিয়ে বরুণ চক্রবর্তীকে দলে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। তিনিই পরবর্তীতে টুর্নামেন্টে ভারতের সেরা বোলার হয়ে ওঠেন, মাত্র তিন ম্যাচে ৯ উইকেট নিয়ে দলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।

জসপ্রীত বুমরাহের অনুপস্থিতিতে, মোহাম্মদ শামি দলের পেস আক্রমণের নেতৃত্ব দিয়েছেন। দীর্ঘ বিরতির পর ফিরে, তিনি ভারতীয় দলের পেস আক্রমণকে কার্যকরভাবে সমর্থন দেন। প্রথম ম্যাচেই বাংলাদেশের বিপক্ষে পাঁচ উইকেট নিয়ে এবং পরবর্তী ম্যাচগুলোতেও নতুন বলে চাপ তৈরি করে তিনি দলের সাফল্যে অবদান রাখেন।

ভারতের ব্যাটিং গভীরতা ছিল তাদের সাফল্যের আরেকটি প্রধান কারণ। দলের অন্যতম প্রধান ব্যাটার বিরাট কোহলি টুর্নামেন্টে দুর্দান্ত ফর্মে ছিলেন। ৫ ম্যাচে ২১৮ রান করে, তিনি দলকে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে জয় এনে দেন। বিশেষ করে, পাকিস্তানের বিপক্ষে তার সেঞ্চুরি এবং অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সেমিফাইনালে ৮৪ রানের ইনিংস দলকে ফাইনালে পৌঁছে দেয়।

এছাড়া, শ্রেয়াস আয়ার, লোকেশ রাহুল, এবং রবি জাদেজার মতো অলরাউন্ডাররা দলের সাফল্যে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। ভারতের ব্যাটিং শক্তি এতটাই গভীর যে, প্রতিপক্ষের জন্য চাপ সৃষ্টি করা ছিল কঠিন।

বিশেষ সুবিধা বা কৌশলগত পরিকল্পনা যাই হোক, মাঠের লড়াইয়ে ভারত ছিল অপরাজিত। ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিং—প্রতিটি বিভাগেই তারা নিজেদের সেরাটা দিয়েছে। কোহলির দৃঢ় নেতৃত্ব এবং স্পিনারদের দাপটের মধ্যে দিয়ে ভারত নতুন করে প্রমাণ করেছে যে তারা বিশ্বের সেরা দল। টিম ইন্ডিয়ার এই অনবদ্য যাত্রা চিরকাল মনে রাখা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *