Breaking News

হেলিকপ্টারে বউ এনে বাবা-মায়ের ইচ্ছা পূরণ করল ছেলে

বাবা-মায়ের আশা ছিল তাদের কোনো এক ছেলের বিয়েতে বউ আসবে হেলিকপ্টারে। বাবা-মায়ের সেই স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিলেন স্বপ্ন সামিউল্লাহ নামে এক মেরিন ইঞ্জিনিয়ার। অবশেষে শনিবার বিকেলে বাবা-মায়ের ইচ্ছা পূরণ করতে ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলার ভবানন্দপুর গ্রামের নিজ বাড়িতে হেলিকপ্টারে করে স্ত্রীকে নিয়ে যান তাদের বড় ছেলে স্বপ্ন সামিউল্লাহ।

স্বপ্ন সামিউল্লাহ উপজেলার নেকমরদ ইউনিয়নের ভবানন্দপুর গ্রামের শরিফ হাসান ও শাহানুর আক্তার দম্পতির বড় ছেলে। তিনি সিঙ্গাপুরের ইস্টার্ন ফেসিবিক শিপিং লিমিটেড নামে একটি প্রাইভেট কোম্পানির মেরিন ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কর্মরত আছেন। কনে মুনতারিন নাজনীন সুইটি পাবনা সদর এলাকার বাসিন্দা ইসাহাক আলীর মেয়ে। তিনি এবার ঢাকা কমিউনিটি মেডিকেল কলেজ মগবাজার থেকে এমবিবিএস ফাইনাল ইয়ারের পরীক্ষা দেন।

শনিবার দুপুরে স্ত্রীকে নিয়ে পাবনা থেকে একটি হেলিকপ্টারে চড়ে নেকমরদ সরকারি আলিমুদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আসেন বর সামিউল্লাহ। এসময় তার সাথে ছিলেন দুই বোন সোনিয়া, সুমি আক্তার ও ছোট ভাই আওলাত হোসেন সমাপ্ত।

হেলিকাপ্টারে চড়ে নতুন বউ আসবে বলে এলাকায় জড়ো হয় হাজার হাজার মানুষ। বর-কনেকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়ে বরণ করে নেন বরপক্ষের আত্মীয় স্বজনরা।

স্বজনরা জানান, সামিউল্লাহ যখন ছোট তখন থেকেই তার বাবা-ময়ের স্বপ্ন ছিল, ছেলের বউকে হেলিকপ্টারে চড়িয়ে বাড়িতে আনবেন। বাবা-মায়ের সেই স্বপ্ন পূরণ করতেই বউ সঙ্গে নিয়ে হেলিকপ্টারে চড়ে তিনি আসেন নিজ বাড়িতে।

স্থানীয় বাসিন্দা আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, গ্রামের মানুষ এতো কাছ থেকে কোনো দিন হেলিকপ্টার দেখেনি। সামিউল্লাহ তার স্ত্রীকে নিয়ে হেলিকপ্টারে করে গ্রামে আসায় গ্রামবাসী আনন্দিত ও গর্বিত।

সামিউল্লাহর বাবা শরিফ হাসান জানান, একসময় পরিবারের মধ্যে তারা আলোচনা করতেন, ছেলের বউ হেলিকপ্টারে বাড়িতে আনার বিষয়ে। সে কথা মনে রেখে ছেলে বাড়িতে হেলিকপ্টারে করে বউ নিয়ে এসেছে আজ। এ সময় তিনি তার প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে বলেন, মনে খুব শান্তি পেয়েছি। আমার আর কোনো ইচ্ছা বাকি নাই।

বরের ছোট ভাই আওলাত হোসেন সমাপ্ত বলেন, আমার বড় ভাই বাবা-মায়ের স্বপ্ন পূরণ করতেই হেলিকপ্টার দিয়ে বউ এনেছেন। আমাদের সবার চেষ্টায় বাবা-মায়ের স্বপ্নটা পূরণ করেছে। এতে আমরা অনেক আনন্দিত।

কনে মুনতারিন নাজনীন সুইটি বলেন, কখনো কল্পনা করেনি হেলিকাপ্টারে চড়ে শ্বশুর বাড়ি যাব। আমার স্বামী আজ তার বাবা-মায়ের স্বপ্ন পূরণ করেছে। এতে আমি অনেক খুশি।

হেলিকপ্টারে বউ আনার বিষয়ে সামিউল্লাহ বলেন, আমি যখন ছোট ছিলাম, তখন থেকেই আমার বাবা-মায়ের খুব ইচ্ছা, আমি যেন হেলিকপ্টারে করে বউ নিয়ে আসি। বাবা-মায়ের ইচ্ছা পূরণ করতেই আজ হেলিকপ্টারে করে বউ আনলাম। তিনি আরও বলেন, ‘প্রতি ঘণ্টার জন্য ৮০ হাজার টাকায় হেলিকপ্টারটি ভাড়া করে আনি।’

জানা যায়, গত ২৫ এপ্রিল মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ভিডিওকলে বিয়ে হয় সামিউল্লাহ ও মুনতারিন নাজনীন সুইটির। সেসময় সামিউল্লাহ সিঙ্গাপুরে ছিলেন। বিয়ের পর মেয়ে তার বাবার বাড়িতেই ছিল। শনিবার তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে ছেলের বাড়িতে নিয়ে আসা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *