প্রতিদিন একটি করে কলা খাওয়া কাদের জন্য জ’রুরি, জেনে নিন
আমাদের দেহের জন্য প্রতিদিন নানা পুষ্টি ও শক্তির প্রয়োজন পড়ে। আর এসব পুষ্টি ও শক্তির জোগান দেয় প্রতিদিনের খাবারের পাশাপাশি ফলমূল। তেমনি একটি ফল হচ্ছে কলা। উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায় কাজে আসতে পারে এই ফল।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত ব্যক্তিদের দিনে কমপক্ষে একটি কলা খাওয়া উচিত।
আমেরিকান জার্নাল অব ফিজিওলজি-রেনাল ফিজিওলজিতে প্রকাশিত একটি নতুন গবেষণায় দেখা গেছে, যে উচ্চ কে+ গ্রহণের সিমুলেশন ক্যালিউরেসিস, ন্যাট্রিউরেসিস ও রক্তচাপে অনেকটাই কমেছে, এমনকি উচ্চ এনএ+ গ্রহণের সঙ্গে মিলিত হলেও। এটি আমাদের মনোযোগ কলার দিকে এনে দেয়, যা পটাশিয়ামের একটি সমৃদ্ধ উৎস।
পটাশিয়াম সমৃদ্ধ
কলা পটাশিয়াম সমৃদ্ধ।
একটি বড় কলায় প্রায় ৪০০-৪৫০ মিলিগ্রাম পটাশিয়াম থাকে, যা আপনার দৈনিক চাহিদার প্রায় ১০%। পটাশিয়াম শরীরে সোডিয়ামের (লবণ) নেতিবাচক প্রভাব ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। প্রক্রিয়াজাত খাবার, স্ন্যাকস ও রেস্তোরাঁর খাবারের জন্য আমাদের বেশির ভাগই প্রয়োজনের চেয়ে অনেক বেশি লবণ গ্রহণ করে। সোডিয়াম শরীরে পানি ধরে রাখে, রক্তের পরিমাণ বাড়ায় এবং এটিই রক্তচাপকে বাড়িয়ে তোলে।
প্রতিদিন একটি কলা খাওয়া কি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে পারে?
না, এতে খুব বেশি পার্থক্য হবে না। তবে হ্যাঁ, এটি একটি প্রাকৃতিক ও স্বাস্থ্যকর বিকল্প। অন্যদিকে, পটাশিয়াম আপনার কিডনিকে প্রস্রাবের মাধ্যমে অতিরিক্ত সোডিয়াম বের করে দিতে সাহায্য করে। তাই, বেশি পটাশিয়াম=কম সোডিয়াম=রক্তচাপ কমায়।
ফাইবার সমৃদ্ধ
কলায় প্রচুর দ্রবণীয় ফাইবার থাকে, যা হৃদপিণ্ডের জন্য ভালো।
কলা কেবল পটাশিয়ামই নয়। এটি দ্রবণীয় ফাইবারেরও একটি দুর্দান্ত উৎস, যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। দ্রবণীয় ফাইবার এলডিএল কোলেস্টেরল (খারাপ কোলেস্টেরল) কমাতে সাহায্য করে। কোলেস্টেরল কমানোর অর্থ হলো ধমনীতে প্লাক জমা কমবে।
কলায় থাকা ফাইবারের ধরন হজমকেও কিছুটা ধীর করে দেয়, যা রক্তে শর্করা ও ইনসুলিনের মাত্রা স্থিতিশীল রাখতে সাহায্য করে। এটি গুরুত্বপূর্ণ, কারণ ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ একসঙ্গেই চলে। সকালের নাশতায় ওটসের সঙ্গে একটি কলা কেটে নিন। দ্বিগুণ ফাইবার পাবেন এবং আপনার দিনের শুরুটাও দুর্দান্ত হবে।
ম্যাগনেসিয়ামের প্রাকৃতিক উৎস
কলায় পর্যাপ্ত পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম থাকে, যা রক্তনালি শিথিল করতে এবং রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। ম্যাগনেসিয়াম ভাস্কুলার টোনে ভারসাম্য রাখে, রক্তনালির দেয়ালে প্রদাহ কমায় এবং হৃৎস্পন্দন ও স্নায়ুর কার্যকারিতা নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত অনেকেরই অজান্তেই ম্যাগনেসিয়ামের ঘাটতি থাকে, বিশেষ করে যদি তারা চাপের মধ্যে থাকে বা হোল গ্রেইন ফুড না খায়।
প্রতিদিন একটি কলা আপনাকে সম্পূর্ণ ম্যাগনেসিয়াম ডোজ দেবে না, তবে এটি একটি দুর্দান্ত শুরু। বিশেষ করে যখন পাতাযুক্ত সবুজ শাক, বীজ ও আস্ত শস্যের সঙ্গে মিশিয়ে খাবেন। ম্যাগনেসিয়াম আপনাকে ভালো ঘুমাতে এবং চাপ নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করবে। এই দুটির অভাব হলে তা সরাসরি রক্তচাপকে প্রভাবিত করে।